মার্কিন মুলুকে থ্যাংকসগিভিং বলে একটা উৎসব আছে। যতটা বুঝি এটা আমাদের নবান্ন উৎসবের মতো। সারা দেশে এমনকি দেশের বাইরে এ উৎসব নিয়ে এক বিশাল যজ্ঞ হয় (অন্য দেশে অবস্থানরত সৈন্য সামন্ত) । এ উপলক্ষে অনেক স্টেইটে স্কুল-কলেজ (কলেজ বলতে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় বোঝায়) এক সপ্তাহের বন্ধ দেয়।
যাই হোক, আমাদের কলেজে এক সপ্তাহ না, মাত্র তিনদিন বন্ধ দিয়েছিল। বুধবার থেকে শুক্রবার। তার সাথে শনি-রবি মিলিয়ে পাঁচদিনের বন্ধ নেহাত খারাপ নয়। অসম্ভব ব্যস্ততা থেকে একটু মুক্তির আশায় কয়দিন ধরেই ভাবছিলাম কোথাও যাওয়া যায় কি-না। এর মধ্যে সুব্রত মেসেজ দিল তারও ছুটি চলছে--কোথাও ফটোওয়াক করা যায় কিনা। সুব্রত আমাদের বাংলা কমিউনিটিতে একমাত্র ফটো-উৎসাহি। সাথে সাথে মনটা নেচে উঠলেও নিমরাজি হয়ে উত্তর দিলাম; চট করে 'হ্যাঁ' বললে দেখা গেল পরে কোন কারণে যেতে পারলাম না। সুব্রত'র সাথে এর আগে রকি মাউন্টেনে গিয়েছিলাম। ছেলে ছবি তুলতে ভালোবাসে।
বৃহস্পতিবার থ্যাংসগিভিং উপলক্ষে সবকিছু ব্ন্ধ থাকবে তাই ঠিক হলো বুধবারেই কোথাও যাবো। আশেপাশের মধ্যে বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন নামে একটা জায়গা আছে। সেখানেই যাবো বলে ঠিক হল। বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন আসলে বাটারফ্লাই কনজারভেটরি। এরা প্রদর্শনী এবং প্রজনন দুটোই করে।
সুব্রত থাকে ডাউনটাউনে। আমার বাসা থেকে উল্টো পথে। ও বাসে করে কাছাকাছি একটা শপিং মলে এসে নামে। সেখান থেকে ওকে তুলে নিয়ে আমার বাচ্চা সহ হাজির হলাম প্যাভিলিয়নে।
বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন হলেও শুধু প্রজাপতি নয়, বাচ্চাদের জন্য আরো বেশ কিছু প্রদর্শনীর ব্যবস্থা আছে। এখানে আছে প্রায় হাতের তালুর সমান বাদামি রঙের রোমশ মাকড়শা (Tarantula)। ক্যামোফ্লেজি ওয়াকিং স্টিক পতঙ্গ (Walking Stick insect)। একুয়ারিয়ামে নিমো মাছ, সি এনিমনি (এক ধরনের কাঁকড়া), টুকটাক আরো অনেক কিছু। আমার মূল উদ্দেশ্য প্রজাপতির ছবি তোলা। এসব পেরিয়ে চলে এলাম মূল কনভারভেটরিতে।
যেমনটা ভেবেছিলাম--ভেতরে ক্রান্তীয় বনের মতো গরম। সে গরমে মনের আনন্দে উড়ে বেড়াচ্ছে শ খানের প্রজাপতি। আরো বেশী হবে হয়তো। অফিশিয়ালি সেখানে দু্ইশ প্রজাতির প্রজাপতি আছে বলে জানা গেল। মোটামুটি দুই ব্যাডমিন্টন কোর্টের সমান ঘরটি। নানা রঙের ফুলের গাছ, লতার গাছ, মানি ক্রিপার বা মানি প্ল্যান্ট, ছোট আকারের সাইকাস, পাইন গাছ, ছোট্ট একটা জলাধার, সেখানে কোথা থেকে যেন পানি পড়ছে। সেখানে আছে রঙিলা কাছিম, দুটো কবুতর। ঝোপের মধ্যে আছে ছোট আকারের মুরগির বাচ্চার মতো কী যেন একটা পাখি। আরেকটা ফুলে গাছ দেখলাম যার নাম Angel's Trumpet (বাংলায় ইসরাফিলের সিঙ্গা বলা যায়)। ফুলটা নাকি বিষাক্ত।
এত ছোট একটা জায়গায় এরকম চমৎকার একটা প্রদর্শনী কেবল এসব দেশেই সম্ভব। এরা সামান্য জিনিসকে অসামান্য ভাবে প্রদর্শন করে সেখানে বিনোদনের ব্যবস্থাও করে সাথে অর্থনৈতিক ভাবে লাভও করে। জানা গেল এসব প্রজাপতির একটা অংশ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। আর কিছু অংশ এখানেই প্রজনন করে। প্রজাপতি আমদানি মানে জ্যান্ত প্রজাপতি আমাদানী নয়, প্রজাপতির ক্রিসেলাস (জীবন চক্রে কোকুনের মতো একটা পর্যায়) বা সেরকম কী একটা কিছু আছে যেটা আমদানী করে (ভুল বললে দয়া করে কেউ শুধরে দিবেন)। এখানে ট্রপিক্যাল প্রজাপতির সাথে কলোরাডোর নেটিভ প্রজাপতিও আছে।
অনেক ছবি তুলেছিলাম। প্রজাপতির ছবি কিভাবে তোলা যায় সে বিষয়ে টেকনিক্যাল একটা লেখা লিখতে গিয়ে ছবিগুলো খরচ করে ফেলেছি। ফটোগ্রাফির ইচ্ছে থাকলে সে লেখাটি এখানে পাওয়া যাবে। তখনই আইডিয়া এলো কিছু ছবি সাদাকালো করার। করেও ফেললাম। শুধু ফুলের ছবি দুটো রঙিন রেখে দিয়েছি। দেখতে চেয়েছিলাম প্রজাপতির সাদা-কালো ছবি কেমন লাগে। আমার ভালই লাগছে। তবে এরকম ছবি প্রজাপতির আসল রঙ-রূপ উপভোগ করার মতো নয় তা বলাই বাহুল্য।
১। উল্টো হয়ে ঝুলে আছে রাইস পেপার (Rice Paper)
২। ক্লাসিক পোজ: রাইস পেপার
৩। ডোরাকাটা ১ (নাম জানি না)
৪। ডোরাকাটা ২ - আলোর বিপরীতে (নাম জানি না)
৫। ফুলের উপর (নাম জানিনা)
৬। ফুলের উপর (নাম জানি না)
৭। ফুলের উপর (নাম জানি না)
৮। নিম্নমুুখি (নাম জানি না)
৯। ভুতুম প্রজাপতি (Owl butterfly)
১০। নীল-ডোরা মর্ফো (Blue Banded Morpho)
১১। যে ফুলে মনার্ক বসে।
১২। লাল ফুল (আনুমানিক পাতা-টু-পাতা ২ সেন্টিমিটার হবে)
১৩। ইসরাফিলের সিঙ্গা (Angel's Trumpet)
সাদাকালো হলেও ছবিগুলো কেমন লাগলো জানাবেন। আমি প্রজাপতি বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। সেদিন ছবি তোলার পরেই দুয়েকটার নাম শিখেছি। সেগুলো দিয়ে দিলাম। অনেকগুলোর নাম জানি না, তাই দিতে পারলাম না। কেউ জানলে মন্তব্যে জানাবেন।
যাই হোক, আমাদের কলেজে এক সপ্তাহ না, মাত্র তিনদিন বন্ধ দিয়েছিল। বুধবার থেকে শুক্রবার। তার সাথে শনি-রবি মিলিয়ে পাঁচদিনের বন্ধ নেহাত খারাপ নয়। অসম্ভব ব্যস্ততা থেকে একটু মুক্তির আশায় কয়দিন ধরেই ভাবছিলাম কোথাও যাওয়া যায় কি-না। এর মধ্যে সুব্রত মেসেজ দিল তারও ছুটি চলছে--কোথাও ফটোওয়াক করা যায় কিনা। সুব্রত আমাদের বাংলা কমিউনিটিতে একমাত্র ফটো-উৎসাহি। সাথে সাথে মনটা নেচে উঠলেও নিমরাজি হয়ে উত্তর দিলাম; চট করে 'হ্যাঁ' বললে দেখা গেল পরে কোন কারণে যেতে পারলাম না। সুব্রত'র সাথে এর আগে রকি মাউন্টেনে গিয়েছিলাম। ছেলে ছবি তুলতে ভালোবাসে।
বৃহস্পতিবার থ্যাংসগিভিং উপলক্ষে সবকিছু ব্ন্ধ থাকবে তাই ঠিক হলো বুধবারেই কোথাও যাবো। আশেপাশের মধ্যে বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন নামে একটা জায়গা আছে। সেখানেই যাবো বলে ঠিক হল। বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন আসলে বাটারফ্লাই কনজারভেটরি। এরা প্রদর্শনী এবং প্রজনন দুটোই করে।
সুব্রত থাকে ডাউনটাউনে। আমার বাসা থেকে উল্টো পথে। ও বাসে করে কাছাকাছি একটা শপিং মলে এসে নামে। সেখান থেকে ওকে তুলে নিয়ে আমার বাচ্চা সহ হাজির হলাম প্যাভিলিয়নে।
বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন হলেও শুধু প্রজাপতি নয়, বাচ্চাদের জন্য আরো বেশ কিছু প্রদর্শনীর ব্যবস্থা আছে। এখানে আছে প্রায় হাতের তালুর সমান বাদামি রঙের রোমশ মাকড়শা (Tarantula)। ক্যামোফ্লেজি ওয়াকিং স্টিক পতঙ্গ (Walking Stick insect)। একুয়ারিয়ামে নিমো মাছ, সি এনিমনি (এক ধরনের কাঁকড়া), টুকটাক আরো অনেক কিছু। আমার মূল উদ্দেশ্য প্রজাপতির ছবি তোলা। এসব পেরিয়ে চলে এলাম মূল কনভারভেটরিতে।
যেমনটা ভেবেছিলাম--ভেতরে ক্রান্তীয় বনের মতো গরম। সে গরমে মনের আনন্দে উড়ে বেড়াচ্ছে শ খানের প্রজাপতি। আরো বেশী হবে হয়তো। অফিশিয়ালি সেখানে দু্ইশ প্রজাতির প্রজাপতি আছে বলে জানা গেল। মোটামুটি দুই ব্যাডমিন্টন কোর্টের সমান ঘরটি। নানা রঙের ফুলের গাছ, লতার গাছ, মানি ক্রিপার বা মানি প্ল্যান্ট, ছোট আকারের সাইকাস, পাইন গাছ, ছোট্ট একটা জলাধার, সেখানে কোথা থেকে যেন পানি পড়ছে। সেখানে আছে রঙিলা কাছিম, দুটো কবুতর। ঝোপের মধ্যে আছে ছোট আকারের মুরগির বাচ্চার মতো কী যেন একটা পাখি। আরেকটা ফুলে গাছ দেখলাম যার নাম Angel's Trumpet (বাংলায় ইসরাফিলের সিঙ্গা বলা যায়)। ফুলটা নাকি বিষাক্ত।
এত ছোট একটা জায়গায় এরকম চমৎকার একটা প্রদর্শনী কেবল এসব দেশেই সম্ভব। এরা সামান্য জিনিসকে অসামান্য ভাবে প্রদর্শন করে সেখানে বিনোদনের ব্যবস্থাও করে সাথে অর্থনৈতিক ভাবে লাভও করে। জানা গেল এসব প্রজাপতির একটা অংশ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। আর কিছু অংশ এখানেই প্রজনন করে। প্রজাপতি আমদানি মানে জ্যান্ত প্রজাপতি আমাদানী নয়, প্রজাপতির ক্রিসেলাস (জীবন চক্রে কোকুনের মতো একটা পর্যায়) বা সেরকম কী একটা কিছু আছে যেটা আমদানী করে (ভুল বললে দয়া করে কেউ শুধরে দিবেন)। এখানে ট্রপিক্যাল প্রজাপতির সাথে কলোরাডোর নেটিভ প্রজাপতিও আছে।
অনেক ছবি তুলেছিলাম। প্রজাপতির ছবি কিভাবে তোলা যায় সে বিষয়ে টেকনিক্যাল একটা লেখা লিখতে গিয়ে ছবিগুলো খরচ করে ফেলেছি। ফটোগ্রাফির ইচ্ছে থাকলে সে লেখাটি এখানে পাওয়া যাবে। তখনই আইডিয়া এলো কিছু ছবি সাদাকালো করার। করেও ফেললাম। শুধু ফুলের ছবি দুটো রঙিন রেখে দিয়েছি। দেখতে চেয়েছিলাম প্রজাপতির সাদা-কালো ছবি কেমন লাগে। আমার ভালই লাগছে। তবে এরকম ছবি প্রজাপতির আসল রঙ-রূপ উপভোগ করার মতো নয় তা বলাই বাহুল্য।
১। উল্টো হয়ে ঝুলে আছে রাইস পেপার (Rice Paper)
২। ক্লাসিক পোজ: রাইস পেপার
৩। ডোরাকাটা ১ (নাম জানি না)
৪। ডোরাকাটা ২ - আলোর বিপরীতে (নাম জানি না)
৫। ফুলের উপর (নাম জানিনা)
৬। ফুলের উপর (নাম জানি না)
৭। ফুলের উপর (নাম জানি না)
৮। নিম্নমুুখি (নাম জানি না)
৯। ভুতুম প্রজাপতি (Owl butterfly)
১০। নীল-ডোরা মর্ফো (Blue Banded Morpho)
১১। যে ফুলে মনার্ক বসে।
১২। লাল ফুল (আনুমানিক পাতা-টু-পাতা ২ সেন্টিমিটার হবে)
১৩। ইসরাফিলের সিঙ্গা (Angel's Trumpet)
সাদাকালো হলেও ছবিগুলো কেমন লাগলো জানাবেন। আমি প্রজাপতি বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। সেদিন ছবি তোলার পরেই দুয়েকটার নাম শিখেছি। সেগুলো দিয়ে দিলাম। অনেকগুলোর নাম জানি না, তাই দিতে পারলাম না। কেউ জানলে মন্তব্যে জানাবেন।
No comments:
Post a Comment