বিপ্রতীপ-এর সাথে প্রথম পরিচয় হয় প্রজন্ম ফোরামে, ২০০৭ সালে। তখন সে ফোরামের মডারেটর ছিল মনে হয়। তো ফোরামে অনেকেই আসে, যায়, নানা ধরনের মন্তব্য করে। অনেকেই অনেক কবিতা পোস্ট করতো। একদিন ওর একটা কবিতা আমার এত ভালো লেগে যায় যে সাথে সাথেই নামটা মাথার মধ্যে ঢুকে যায়। সেই কবিতা দিয়ে আমার স্বাক্ষর বানিয়েছিলাম তা বেশ মনে পড়ে।
তারপর বিপ্রতীপ সহ আরো কয়েকজন মিলে আমাদের প্রযুক্তি ফোরাম খোলে। সেখানে গিয়ে সে কয়েকটা ই-বইও বের করেছে মনে হয়। সচলায়তনে আসার পরে অন্যান্য ফোরামে সময় কম দেয়া হয় বলে ঠিক বলতে পারছিনা।
তার পর অনেক সময় গড়িয়ে যায়। হঠাৎ একদিন আমাকে মেইল করে জানায় সে কানাডায় আসতেছে। আমিতো শুনে খুবই উল্লসিত হই। পরক্ষণেই আবার দমে যাই যখন শুনি যে রেজাইনাতে যাচ্ছে।
এবছর মার্চের দিকে ওর সাথে আবার যোগাযোগ করি-- অফার দেই আমার এখানে আসার। আমাকে রীতিমতো অবাক করে দিয়ে জানায় সে ওয়েস্টার্নে এ্যডমিশন পেয়েছে। আমি খুবই আনন্দিত হই এবং সাথে সাথেই পরিকল্পনা করে ফেলি টরন্টো-অটাওয়া ভ্রমণের। সত্যিকার অর্থে সেসময়ই টরন্টোতে একটা সচলাড্ডার পরিকল্পনা করি। ভেবেছিলাম শিমুল, অমিত, এরা এত কষ্ট (এবং খরচ) করে আমার এখানে আসবে কেন, তারচে বরং ওদের সবাইকে নিয়ে টিউলিপ ফেস্টিভালে যাই আর কোন একখানে আড্ডাটা সেরে ফেলি।
কিন্তু বিপ্রতীপ পজেটিভ সাড়া দেয়না। আবার মেইল করি, তখন সে আমতা আমতা করে। বুঝতে পারি, নতুন ইউনিভার্সিটিতে নতুন প্রফেসর, তার উপর নতুন কয়েকটা কোর্স নিতে হচ্ছে। তখনো কিন্তু আমি শিমুল বা অমিতের সাথে যোগাযোগ করিনি। আমি তখন জানতাম কিংকং আসতে পারবেনা, কারণ সে তো থাকে অনেক দূরে।
যাহোক, শেষ পর্যন্ত একদিন সাহস করে ফেসবুকে শিমুলকে যোগ করি। শিমুল মেইল করে তার ইমেইল ঠিকানা দেয়। আমি পাল্টা উত্তর দেই। তারপরের ঘটনাতো সবারই জানা। ওরা সবাই উইন্ডজরে বেড়াতে আসে।
২৬ তারিখ সন্ধ্যায় ওদের আসার কথা। বাস স্ট্যান্ডে বসে আছি কোন খবর নাই। এদিকে পার্কিং লটে ৩০ মিনিটের টিকিট শেষ হয়ে যায়, আমি আবার সেটা রিনিউ করি। তার পর প্রায় ১ ঘন্টা দেরীতে বাস এখানে পৌঁছায়।
শিমুলকে কোনদিনই দেখিনি। কিন্তু বিপ্রতীপের প্রোফাইলের ছবি (এখনকার আখের রসের ছবি না) দেখেছিলাম। সেখানে মুখ দেখা যায়না, শুধু চুল দেখা যায়। সেই চুল দেখেই বিপ্রতীপকে আমি চিনে ফেলি। সাথে সাথে অন্যজন যে শিমুল তা বুঝতে দেরী হয়না।
ছোটখাট, চুপচাপ, ছোটভাই-ছোটভাই টাইপের ছেলে বিপ্রতীপ। আস্তে আস্তে কথা বলে, মন দিয়ে অন্যের কথা শোনে। কিংকং বলছিল সে দারুণ রান্না করে। নিজে তার প্রমাণ পেয়ে সার্টিফাই করেছি :)
যার জন্য এত কথা আজ ২০ জুলাই সেই বিপ্রতীপের জন্মদিন। ২০ জুলাই ছিল মানুষের প্রথম চাঁদে অবতরণের দিন। এ্যাপোলো ১১ যেমন প্রযুক্তির উৎকর্ষের এক জ্বলন্ত প্রমাণ, তেমনি একই দিনে জন্ম নেয়া (একই বছর নয় কিন্তু) বিপ্রতীপ তার আলোয় আলোকিত করবে চার চারপাশকে-- এই প্রত্যাশায় জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
শুভ জন্মদিন, বিপ্রতীপ।
বিপ্রতীপের ব্লগ।
No comments:
Post a Comment