অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ফল (Fall)-এর আমেজ ততটা পাওয়া যায়না। আমেজ না থাকলে কি হবে তাপমাত্রা এখনই ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। সেদিন ফলের জন্য হাহাকার করছিলাম। ভেজাভেজা হালকা বাতাস আর গোমরামুখো মেঘের আবরণে আকাশ ঢাকা থাকলেও সেদিন বেরিয়ে পড়েছিলাম প্রকৃতির রঙ দেখতে। প্রকৃতি নিরাশ করেনি, প্রকৃতি কখনোই নিরাশ করেনা। প্রকৃতির মাঝে যত বহুমাত্রিক সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তা সারা জীবন দেখলেও অতৃপ্তি রয়ে যাবে, একঘেয়ে লাগবেনা। হয়তো এক মাত্রা দেখতে দেখতেই সময় ফুরিয়ে যাবে।
হাইওয়েতে উঠেই ফলের আমেজ পেলাম। এমন সৌন্দর্য বাড়ির আশেপাশে সচরাচর দেখা যায়না। মুগ্ধ হয়ে দেখছি আর ভাবছি প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যদি জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যেতো, হয়তো ভালই হতো।
হাইওয়ে ধরে সোজা উত্তর-পূর্বে চলছি লন্ডনের উদ্দেশ্যে। একটু পরে পরে দুইপাশে সারি সারি ম্যাপলের বন। এক সারি টকটকে লাল, আরেক সারি পাকা আমের মতো হলুদাভ-কমলা, কতক উজ্জ্বল হলুদ, বাকী গুলো সবুজ। সকলে মিলে যেন একটি পরিবার-- কেউ বয়স্ক, কেউ যুবা, কেউবা নবীন। যেন আসন্ন উৎসবে যোগ দিতে নিজের গায়ে নিজেই রঙ করে রোদে শুকাতে দিয়েছে।
গাড়ি চলছে একশ-দশ কিলোমিটার গতিতে। চোখে ঝলক দিয়েই ম্যাপলের বন গুলো চলে যাচ্ছে পেছনে। সরে যাচ্ছে দ্রুত। তার পরই দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। দুপাশে যতদূর চোখ যায় ঝলমল করছে ভুট্টার ক্ষেত। স্থানে স্থানে বেড়া দেয়া সবুজ মাঠ, সেখানে গরুর পাল অলস ভাবে চরে বেড়াচ্ছে। বিদ্যুতের তারে হঠাৎ দু্য়েকটা ঈগলের মতো বড় পাখি চোখে পড়ে।
দেখছি আর ভাবছি প্রকৃতি এত মনোহর হয় কী করে। এত রূপ কিভাবে সে ধারণ করে। রবীন্দ্র সঙ্গীত বেজে চলছে। কত যে তুমি মনোহর মনই তাহা জানে... অসাধারণ এই গানটি যেন চারপাশের পরিবেশকেই সুরের ঢেউয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে। দ্রবীভূত হয়ে যাই অজানা আনন্দে, চোখে জল এসে যায়। কবিগুরু কাকে ভেবে এই গান লিখেছেন জানিনা, শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি; হারিয়ে যাই প্রকৃতি আর গানের ঐকতানে।
কত যে তুমি মনোহর মনই তাহা জানে,
হৃদয় মম থরোথরো কাঁপে তোমার গানে।
আজিকে এই প্রভাতবেলা মেঘের সাথে রোদের খেলা,
জলে নয়ন ভরোভরো চাহি তোমার পানে।
আলোর অধীর ঝিলিমিলি নদীর ঢেউয়ে ওঠে,
বনের হাসি খিলিখিলি পাতায় পাতায় ছোটে।
আকাশে ওই দেখি কী যে -- তোমার চোখের চাহনি যে,
সুনীল সুধা ঝরোঝরো ঝরে আমার প্রাণে।
|
লন্ডনে পৌঁছে আমরা একটা বীচে গিয়েছিলাম। সেটা অনেকটা কক্সবাজারের মত বীচ। ঢেউ গুলো প্রায় সেরকম সাইজের। তবে এত ঠান্ডা ছিলো যে ক্যামেরা বের করা কঠিন হচ্ছিল। সেখানের দুইটি ছবি:
[b]ফলের আরো কয়টি ছবি:[/b]
মেঘলা দিনে একটুখানি রোদ উঠেছিল। দেয়ার মতো ছবি আসলে তুলতে পারিনি। তাও এই কয়টা মন্দের ভালো বলতে পারেন।
It might be great pleasure to live around such a colorful place. The second pic is too wonderful!
ReplyDelete